নির্বাচন কমিশন যেখানে অসহায়

ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো মানুষ ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে না। খুব সম্ভবত এ কথাটি বাংলাদেশের মানুষের জন্যই সবচেয়ে বেশি প্রযোজ্য। রোববার নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজের কণ্ঠস্বর পুরনো কথাটি নতুন করে মনে করিয়ে দিলো। স্বাধীন নির্বাচন কমিশন, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন আওয়াজ গত চার দশকে বহুবার শোনা গেছে। সবচেয়ে বেশি শোনা গেছে পার্মানেন্ট ক্ষমতাসীন পার্টির মুখেই। তবে কাজের কাজ যে কিছুই হয়নি নির্বাচন কমিশনের অসহায় উচ্চারণ তা আরও একবার নিশ্চিত করেছে। পৌরসভায় ভোট ৩০শে ডিসেম্বর। এর আগেই আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক পড়েছে। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধেই। এ অবস্থায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছে নির্বাচন কমিশন।
নানান কিসিমের ভোট দেখা গেছে এ ভূমে। পৃথিবীর ইতিহাসে এতো বৈচিত্র্যময় ভোট খুব বেশি দেশে হয়নি। দুনিয়ার বেশিরভাগ দেশেই স্থানীয় নির্বাচন দলভিত্তিক হয়। হানাহানির অতীতের কারণে আমরা এই ব্যবস্থা থেকে দূরে ছিলাম। তবে সর্বত্র ‘গণতান্ত্রিক’ রীতি চালুতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বাংলাদেশ এবার স্থানীয় নির্বাচনও করছে দলীয়ভিত্তিতে। সেখানেও অবশ্য ব্যতিক্রমী ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মেয়র পদে নির্বাচন হবে দলীয়, আর কমিশনার পদে হবে নির্দলীয়। কাদের সুবিধার জন্য তা করা হয়েছে সে ব্যাপারে মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।
স্থানীয় এ নির্বাচন দেশে অবশ্য এক ধরনের আশার পরিবেশও তৈরি করেছে। দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশের জনগণ নৌকা এবং ধানের শীষের মধ্যে প্রতীক বাছাইয়ের সুযোগ পাবে। যদিও আদৌ সে সুযোগ তারা পাবেন কি-না তা দেখার জন্য ভোটের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। আলামত অবশ্য ভালো নয়। প্রতিদিনই সংঘর্ষ, হামলার খবর পাওয়া যাচ্ছে। দুই/একটি ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবে ক্ষমতাসীন দলের কারও বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়ার নজির এখনও দেখা যায়নি। হোন্ডা-গুণ্ডার নির্বাচন দেখতে হয় কি-না তা নিয়ে এরইমধ্যে ভোটারদের মধ্যে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক। একটি উপজেলায় এমনও অভিযোগ এসেছে, বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন দিয়ে এসেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। ৩০শে ডিসেম্বরের ভোট কয়টায় শেষ হবে সে নিয়ে আলোচনা এখনই শুরু হয়ে গেছে।
কোনো কোনো পর্যবেক্ষক, স্বাধীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হিসেবে চিহ্নিত করেন প্রতিষ্ঠান তৈরি করতে না পারাকে। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি না হওয়াতে বারবার সংকটে পড়েছে বাংলাদেশ। রাজপথে রক্ত ঝরেছে। ব্যর্থতার দায়ভার মানুষ বহন করেছে জীবনের বিনিময়ে। পবিত্র সংবিধান নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ঘোষণা করছে। তবে তা যে কেবল কাগুজে ঘোষণাই তা বারবার প্রমাণ হয়েছে। যদিও কখনও কখনও নির্বাচন কমিশনারদের আমরা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছি, নির্বাচন কমিশনের মেরুদণ্ড সোজা রয়েছে।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেরুদণ্ড শক্ত কি-না সে পরীক্ষা ভোটের মাঠে কয়েকবারই হয়েছে। এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়, ইতিহাসে তাদের স্থান নির্ধারিতই হয়ে গেছে। কেউ চাইলেও তা আর পরিবর্তন করতে পারবেন না। এবং ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনেও যে তার কোন ব্যতিক্রম হবে না তা এখন হলফ করেই বলা যায়।
৩ এমপিকে দায়মুক্তি, ৫ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নির্দেশ
পৌরসভা নির্বাচনে আচরণবিধি ভেঙে দুঃখ প্রকাশ করা ক্ষমতাসীন সরকারের তিন এমপির অপরাধ মার্জনা করে দায়মুক্তি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এমপিরা হলেন- ঢাকা-২০ আসনের সংসদ সদস্য এমএ মালেক, নাটোর-২ আসনের মো. শফিকুল ইসলাম শিমুল ও বরগুনা-২ আসনের শওকত হাচানুর রহমান রিমন। এর আগে তথ্য ও ধর্মমন্ত্রীকে অব্যাহতি দেয় কমিশন। অন্যদিকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ক্ষমতাসীন সরকারের মন্ত্রী ও হুইপসহ পাঁচ এমপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে ইসি। এ সংক্রান্ত চিঠি সংশ্লিষ্টদের কাছে সোমবার পাঠিয়েছে কমিশন।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, সরকারের তিনজন এমপি পৌর নির্বাচনে আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেছিল। এ অপরাধে কমিশন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চিঠি পাঠায়। ইসির চিঠির জবাবে তারা আচরণবিধি লঙ্ঘনের অপরাধ স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেন। তাই কমিশন বিষয়টি মানবিক বিবেচনায় ওই অপরাধ থেকে দায়মুক্তি দিয়ে চিঠি পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এর আলোকে গতকাল তাদের চিঠি পাঠানো হয়েছে। ইসির কর্মকর্তারা আরও জানান, সম্প্রতি ক্ষমতাসীন সরকারের তিন এমপি দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট প্রার্থনা করে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেন। এই অপরাধের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন তাদের শোকজ করে চিঠি পাঠায়। তারা শোকজের জবাব দিয়ে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করেন। পাশাপাশি দুঃখ প্রকাশ করেন। পরে কমিশন তাদের জবাব পর্যালোচনা করে রোববার দায়মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এ ছাড়া আগামীতে যাতে আচরণবিধি মেনে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেন সে বিষয়ে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানিয়েছে ইসি। আর গতকাল চিঠি দিয়ে তাদেরকে দায়মুক্তির বিষয়টি জানানো হয়েছে। এর পর তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছিল কমিশন। তদন্ত করে মন্ত্রীরা আচরণবিধি ভেঙেছেন তার কোনো সত্যতা ও প্রমাণ পাননি সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা। বিষয়টি কমিশনকে লিখিত জানালে দুই মন্ত্রীকেও অব্যাহতি দেয় ইসি।
অন্যদিকে পৌর নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ক্ষমতাসীন সরকারের মন্ত্রী ও হুইপসহ পাঁচ এমপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল নির্বাচন কমিশনের উপসচিব রকিবউদ্দীন মণ্ডল স্বাক্ষরিত এসব চিঠি সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়। এর আগে ১২ এমপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দিয়েছিল কমিশন। নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে. (অব.) মো. জাবেদ আলী বলেন, বর্তমানে যে আইন রয়েছে এতে বিচারিক ক্ষমতা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে দেয়া আছে। আচরণবিধি লঙ্ঘন হলে রিটার্নিং কর্মকর্তা বা নির্বাহী এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা ‘অন দ্য স্পট’ ব্যবস্থা নেবেন। আইন অনুযায়ী তারা ব্যবস্থা নিতে আমরা সব রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছি। আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। ইসির কর্মকর্তারা জানান,  যেসব এমপির বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এসেছে তারা হলেন- সিরাজগঞ্জ সদর আসনের এমপি মোহাম্মদ নাসিম (স্বাস্থ্যমন্ত্রী), শেরপুর সদরের আতিউর রহমান আতিক (জাতীয় সংসদের হুইপ), রাজশাহী বাগমারার এমপি এনামুল হক, ময়মনসিংহ নান্দাইলের এমপি আনোয়ারুল আবেদীন খান ও ফেনীর এমপি নিজাম হাজারী। সবাই সরকারি দল সমর্থিত বলে জানা গেছে। এর আগে ১২ এমপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের চিঠি দেয় ইসি। এরা হলেন- হবিগঞ্জের অ্যাডভোকেট আবু জাহির, শরীয়তপুরের নাহিম রাজ্জাক, নাটোরের অধ্যাপক আবদুল কুদ্দুস, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দিন খান আলমগীর, জয়পুরহাটের আল মাহমুদ স্বপন, কিশোরগঞ্জের অ্যাডভোকেট সোহরাবউদ্দিন আহমেদ ও আফজাল হোসেন, ফরিদপুরের মো. আবদুর রহমান, রাজশাহীর আব্বাস আলী এবং সিরাজগঞ্জের হাসিবুর রহমান স্বপন। পৌর নির্বাচনের আচরণবিধি অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, মন্ত্রী, চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, বিরোধীদলীয় নেতা, উপমন্ত্রী বা তাদের সমমর্যাদার কোনো সরকারি সুবিধাভোগী ব্যক্তি, সংসদ সদস্য ও সিটি কর্পোরেশনের মেয়রগণ নির্বাচনী প্রচারণা বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না। এ আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে অনধিক ৬ মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডেদণ্ডিত হওয়ার বিধান আছে। র্স্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের ক্ষমতাও আছে ইসির।
ওদিকে, ফেনী-২ আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীর বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে মনিটরিং কমিটি। ঈশ্বরদী পৌরসভার আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করেছে ইসির মনিটরিং কমিটি। ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিজয় র‌্যালির নামে গত বুধবার বিকালে নির্বাচনী শোডাউন করেছেন। র‌্যালিটি শহরের আলহাজ মোড়ের স্বাধীনতা স্তম্ভের সামনে থেকে শুরু হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা প্রদক্ষিণ করে। যার নেতৃত্ব দেন মেয়রপ্রার্থী আবুল কালাম আজাদ।
ময়মনসিং-৯ আসনের এমপি আনোয়ারুল আবেদিন খান তুহিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, গত বুধবার বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সভায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীকে নির্বাচিত করলে নান্দাইলের এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়র হবেন একই দলের। এতে নান্দাইল পৌরসভাসহ গোটা উপজেলার সার্বিক উন্নয়ন হবে। ওই সভায় আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
রংপুরের বদরগঞ্জ পৌরসভায় এক এমপি ও দুই মেয়রপ্রার্থীর আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের প্রেক্ষাপটে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মনিটরিং কমিটি সুপরিশ করেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিজয় দিবসে ভোরে সহস্রাধিক কর্মী-সমর্থক নিয়ে শহীদ বেদিতে ফুল দিতে আসেন রংপুর-২ আসনের এমপি আবুল কালাম মো. আহসানুল হক ডিউক। এরপর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও মেয়রপ্রার্থী অধ্যাপক পরিতোষ চক্রবর্তী ও জাতীয় পার্টির মেয়রপ্রার্থী লাতিফুল খাবির পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে আসেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বক্তব্য দেয়ার সময় এমপি ডিউক দলীয় প্রার্থীর নৌকা প্রতীকে ভোটারদের সমর্থন চান। এরপর আচরণবিধি লঙ্ঘন করে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী অধ্যাপক পরিতোষ চক্রবর্তীর পক্ষে ভোট চান উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন শাহান। জাপার প্রার্থী লাতিফুল খাবিরও ফুল দিয়ে যাওয়ার সময় নির্বাচনী প্রচারণা চালান।
১৫ রিটার্নিং কর্মকর্তাকে চিঠি
১৫টি পৌরসভায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের সত্যতা যাচাই ও অভিযোগের প্রেক্ষিতে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে রিটার্নিং অফিসারকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের মনিটরিং কমিটি। পৌরসভাগুলো হচ্ছে- ফেনী, দাগনভূইয়া, পরশুরাম, ঈশ্বরদী, নান্দাইল, বদরগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ, রায়গঞ্জ, খোকসা, মুক্তাগাছা, কলাপাড়া, বড়াইগ্রাম, তাহেরপুর, শেরপুর ও বরগুনা। গতকাল নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. শাহ আলম প্রার্থীদের অভিযোগ ও ইসির মনিটরিং কমিটির প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারদের এসব চিঠি পাঠান।
পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হুমকির অভিযোগ
নরসিংদী পৌরসভায় পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও স্বতন্ত্র প্রার্থীকে ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ করেছেন জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক কৌশিক কায়কোবাদ কেনি। নির্বাচন কমিশনে দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী গত ১৫ই ডিসেম্বর বেলা সাড়ে তিনটা থেকে রাত অবধি বিভিন্ন সাংগঠনিক সভার নামে নির্বাচনী প্রচারণা, দিকনির্দেশনা ও হুমকিমূলক বক্তব্য প্রদান করেছেন। তিনি বক্তব্যে বলেছেন, ‘২০শে ডিসেম্বরের পর স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম কাইয়ুমের কোনো নেতাকর্মীকে মাঠে খুঁজে পাওয়া যাবে না’। তার এই বক্তব্যের মাধ্যমে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছেন।
এসপিসহ পাঁচ কর্মকর্তাকে শোকজ
বরগুনা পৌরসভায় দুই প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ ও আচরণবিধি লঙ্ঘন হওয়ার পরও ব্যবস্থা না নেওয়ায় রিটার্নিং অফিসার, পুলিশ সুপারসহ ৫ জনকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। দায়িত্ব অবহেলার জন্য কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না জানতে চেয়ে বৃহস্পতিবারের মধ্যে নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে। সোমবার ইসির উপসচিব সামসুল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। বরগুনা পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র সাহাদাত হোসেনের উঠোন বৈঠকে যুবলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালায়। আওয়ামী লীগ প্রার্থী কামরুল আহসান মহারাজ যুবলীগের জেলা সভাপতিও। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দুই প্রার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের শোকজ করা হয়েছে বলে জানান ইসির এ উপসচিব। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মিছিল-শোডাউনে আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়েছে। কিন্তু রিটার্নিং অফিসার এ নিয়ে কোনো ব্যবস্থা নেননি। এরপর সংঘর্ষের বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় নি বলে রিটার্নিং অফিসার, এসপি, ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন প্রার্থী সাহাদাত। ইসির উপসচিব সামসুল আলম বলেন, দায়িত্বে অবহেলার জন্য কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে শোকজ নোটিশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। তিন দিনের মধ্যে জবাব দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। তিনি জানান, রিটার্নিং কর্মকর্তা (অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক), এসপি, ওসি, দুই প্রার্থী সাহাদাত হোসেন ও কামরুল আহসানকে আলাদা আলাদা নোটিশ পাঠানো হয়েছে।